শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১০ অপরাহ্ন

টানা কর্মসূচিতে আ’লীগ, দুশ্চিন্তায় বিএনপির নেতাকর্মীরা

Reporter Name / ৩৬৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩

ঢাকার রাজপথের নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া করতে চায় না আওয়ামী লীগ। এ কারণে টানা কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। সভা, সমাবেশ, অবস্থান, মিছিল ও পদযাত্রা—এ ধরনের নানা কর্মসূচি নিয়ে অক্টোবরজুড়ে রাজপথে সক্রিয় থাকবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নিজেদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগও দলের কেন্দ্রের নির্দেশিত কর্মসূচির বাইরে নিজেদের কর্মসূচি ঠিক করছে।

বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের এক দফার আন্দোলনের মুখে ঢাকার রাজপথের নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চায় না আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে ভোটের আমেজ সৃষ্টি করতে চায় দলটি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এই দুই লক্ষ্য থেকে আওয়ামী লীগ এবার ঢাকার সংসদীয় আসন ধরে ধরেও সমাবেশ-মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছে। এ মাসেই ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুটি সমাবেশে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি বা বড় জমায়েত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তৎপরতা চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।  ৯ অক্টোবর গাবতলীতে সমাবেশ ও মিছিল হয়েছে। ১০ অক্টোবর প্রতিনিধি সভা করেছে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। গতকাল বুধবার ঢাকা-১৮ আসনের তুরাগ, উত্তরা ও উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় কর্মিসভা ও মিছিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা-১৪, ১৫ ও ১৬ আসনের অধীন সব থানায় কর্মিসভা ও মিছিল  অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার ঢাকা-১১, ১২ ও ১৩ সংসদীয় আসনের থানায় থানায় কর্মিসভা ও মিছিল হবে। এরপর ১৪ অক্টোবর হবে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ।

এদিকে সরকার পতনের একদফা দাবিতে টানা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগেই চূড়ান্ত ফয়সালা চায় দলটি। তবে হঠাৎ করে নেতাকর্মীদের নামে ‘গায়েবি’ মামলা, গ্রেফতার ও দণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা বেড়ে গেছে। যাকে নির্বাচনের আগে দলকে চাপে রাখার কৌশল ভাবছেন নীতিনির্ধারকরা। এ নিয়ে কেন্দ্র ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তারা সাজা ও গ্রেফতারের চাপে রয়েছেন। বিশেষ করে দুর্নীতি, জ্বালাও-পোড়াও, সন্ত্রাসবিরোধী ও নাশকতার শতাধিক মামলার বিচারে গতি এসেছে। যাকে ‘রাজনৈতিক মামলা’ বলছে বিএনপি।

ইতোমধ্যে অনেক নেতার সাজাও হয়েছে। এসব মামলায় আসামিদের তালিকায় বিএনপি মহাসচিবসহ অনেক শীর্ষ নেতাও রয়েছেন। তবে এ নিয়ে চিন্তিত হলেও দাবি আদায়ে আত্মবিশ্বাসী বিএনপি। চলতি মাসকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ ধরে এই সময়ে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে আন্দোলন সফল করাসহ প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আন্দোলন দমাতে হঠাৎ করে নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ও বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গত মঙ্গলবার গভীর রাতেও ধানমন্ডির বাসার দরজা ভেঙে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, আগামী নভেম্বরের শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে—এটি ধরে নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু এখন তফসিল পেছানো হতে পারে—এমন একটা ধারণা দলটির ভেতরে আলোচনায় রয়েছে। যদি তফসিল পেছানো হয়, তাহলে অক্টোবরের কর্মসূচি টেনে তফসিল পর্যন্ত নেওয়ার পরিকল্পনাও করছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপির কর্মসূচির ধরন কী হবে, তার ওপর ভিত্তি করে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিও পরিবর্তন হতে পারে।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাধারণত তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই নির্বাচনী আমেজে চলে যায় রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু এবার বিরোধী দলের এক দফার আন্দোলনের কারণে আলাদা করে নির্বাচনী প্রস্তুতির সুযোগ নেই আওয়ামী লীগের। এ জন্যই বিরোধী দলের মতো রাজপথের কর্মসূচিতে আঁকড়ে আছে ক্ষমতাসীন দলও। এরপরও কিছুটা নির্বাচনী আমেজ আনতে ঢাকায় আসনভিত্তিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ওই নেতা আরও বলেন, এতে সংসদ সদস্যদের সম্পৃক্ততা বাড়বে। জমায়েতও বড় হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, গত ২৮ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি ঘিরে মামলা হয়েছে ৩৪৩টি। আসামি ১৩ হাজার ২৭০ জন এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ২২৫০ জন।

বিএনপির দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত ১ লাখ ১২ হাজারের মতো মামলা হয়েছে। এতে আসামি প্রায় ৪০ লাখ। বেশিরভাগ মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। এরসঙ্গে সচল হচ্ছে ওয়ান-ইলেভেন ও পরবর্তী সময়ে সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত দুর্নীতির পুরোনো মামলা। শুরু হয়েছে বিচারকাজও।

বিএনপির আইনজীবীরা বলছেন, সরকারের শেষ সময়ে এসে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে মামলার বিচারের গতি বেড়ে যাওয়ায় কারাগারের থাকা নেতাদের অনেককেও প্রায় প্রতিদিন আদালতে হাজির করা হচ্ছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও মহাসচিব থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের সব নেতাই মামলার আসামি। এর মধ্যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগেই সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। এ ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে ৯ বছর, ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমানকে ১৩ বছর ও তার স্ত্রীকে ৩ বছর, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে ৭০ বছর, রাজশাহী জেলা বিএনপি সভাপতি আবু সাঈদ চাঁদকে ৩ বছরসহ যুবদল, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।  এর আগে আগে সাতক্ষীরা জেলায় এবং ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে ফাঁসি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন আদালতে গত আট মাসে বেশ কয়েকটি মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে। তারা মূলত কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মী। এর মধ্যে আট বছর আগে গুলশান এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার মামলায় গত বছরের ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর যুবদলের (উত্তর) তৎকালীন আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিনসহ তিন বিএনপি নেতাকে কারাদণ্ড দেন আদালত।

১০ বছর আগে সবুজবাগে ককটেল বিস্ফোরণসহ নাশকতার মামলায় গত ১৯ জুন বিএনপি নেতা, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর হামিদুর রহমানসহ সাতজনের দুই বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। আর ১০ বছর আগে মুগদা এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় গত ৩ এপ্রিল বিএনপির আরও সাত নেতাকর্মীর কারাদণ্ড দেন আদালত। গত ৭ আগস্ট যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ২১ জনের কারাদণ্ড দেন ঢাকার সিএমএম আদালত। ২০১৩ সালে কোতোয়ালি থানা সংলগ্ন এলাকায় গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগের মামলা ছিল এটি। গত ১৮ আগস্ট রমনা থানার একটি মামলায় আবুল কালাম আজাদ নামে একজন বিএনপি কর্মীকে সাজা দেন আদালত।

বনানী থানার একটি মামলায় ৮ অক্টোবর ১০ জন বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে। আট বছর আগে ভাটারা থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় ৯ অক্টোবর ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকনসহ ১৫ জন নেতাকর্মীকে ৪ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

জানা গেছে, আরও দুই শতাধিক মামলার শুনানি চলছে। এর মধ্যে অন্তত ৩০টির বিচার শেষ পর্যায়ে। ১৭০টি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এসব মামলায় কেন্দ্র থেকে শুরু করে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা রয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সম্প্রতি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনাও দ্রুত বাড়ছে। পুলিশের পাশাপাশি ডিবি এ ব্যাপারে অধিক তৎপর। স্বাভাবিক দলীয় শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ড, এমনকি গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে আগের কোনো গায়েবি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এজাহারভুক্ত আসামি না হওয়া সত্ত্বেও জামিন দেওয়া হচ্ছে না। উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্তরা নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে গেলেই জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব করে বিরোধীদের আন্দোলন দমানো যাবে না। ফ্যাসিবাদের পতন নিশ্চিত করে গণতন্ত্রের জয়যাত্রা নিশ্চিত করার লড়াইয়ে দেশের সংগ্রামী জনগণ অবশ্যই বিজয়ী হবে।’

তবে সরকারের সংশ্লিষ্টরা এই অভিযোগ মানতে নারাজ। ঢাকা মহানগরের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আবু বলেন, ‘সাজা নিয়ে বিএনপি যেসব কথা বলছে তা মনগড়া। আসলে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। মামলাগুলো বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে। চার্জশিট হয়েছে, সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। সবচেয়ে বড় কথা মামলা যত তাড়াতাড়ি শেষ হবে তা সবার জন্যই মঙ্গল। নইলে কোর্টে আসা-যাওয়া এটা একটা বিড়ম্বনা।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলা ৯৮টি। তিনি গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার এক অনুষ্ঠানে ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘আমার নামে ৯৮টি মামলা। আর দুটি হলে সেঞ্চুরি হবে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খানের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৪৫০। তার বিরুদ্ধে একেক দিন শুনানি থাকে চার থেকে পাঁচটি মামলার। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাসের মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে।  জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে করা মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় খন্দকার মোশাররফের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণও শেষ হয়েছে। সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষ হলেই মামলাটি রায়ের পর্যায়ে যাবে। মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এ বিচারাধীন।  স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমানের বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে বাস পোড়ানোর একটি মামলায় সম্প্রতি অভিযোগ গঠন হয়েছে। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলার বিচার চলছে। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা শেষ পর্যায়ে আছে। ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আটজন সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসের ২৫টি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ দ্রুতগতিতে চলছে। ফলে প্রায় প্রতিদিনই তাকে আদালতে হাজির হতে হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের বিরুদ্ধে মামলা ৮০টি, এর মধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে ১০টি মামলা। একই কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা ১২৭টি।

বিএনপির নেতাদের আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ঢাকায় বাসে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা দুই শতাধিক মামলার তালিকা তৈরি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নিয়মিত সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে।

এদিকে ১৪ অক্টোবর বিমানবন্দরের কাছে কাওলা সিভিল এভিয়েশন মাঠে জনসভা করবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন উপলক্ষে ৭ অক্টোবরই সমাবেশটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন স্থগিত করে এখন সেই সমাবেশ করা হচ্ছে ১৪ অক্টোবর।

ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সূত্র বলছে, এর মধ্যে ৯ অক্টোবর গাবতলীতে সমাবেশ ও মিছিল হয়েছে। ১০ অক্টোবর প্রতিনিধি সভা করেছে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। গত বুধবার ঢাকা-১৮ আসনের তুরাগ, উত্তরা ও উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় কর্মিসভা ও মিছিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা-১৪, ১৫ ও ১৬ আসনের অধীন সব থানায় কর্মিসভা ও মিছিল হয়েছে। শুক্রবার ঢাকা-১১, ১২ ও ১৩ সংসদীয় আসনের থানায় থানায় কর্মিসভা ও মিছিল হবে। এরপর ১৪ অক্টোবর হবে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ। মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২০ অক্টোবর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে। ২৫ অক্টোবর হবে বাড্ডা এলাকায় পদযাত্রা। ২৮ অক্টোবরও পদযাত্রা আছে। তবে স্থান এখনো ঠিক হয়নি। ৩১ অক্টোবর উত্তরায় পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে। এসব কর্মসূচির সমন্বয় করছেন এমন একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে লোক আনার মূল দায়িত্ব মহানগর উত্তরের। মহানগর দক্ষিণ, ঢাকা জেলা ও ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকেও নেতা-কর্মীদের আনা হবে। গত ২ সেপ্টেম্বর দ্রুতগতির উড়ালসড়ক চালুর দিন যেভাবে সমাবেশ করা হয়, সেই রকমই সমাবেশ হবে। এরপর মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২০ অক্টোবর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে। ২৫ অক্টোবর হবে বাড্ডা এলাকায় পদযাত্রা। ২৮ অক্টোবরও পদযাত্রা আছে। তবে স্থান এখনো ঠিক হয়নি। ৩১ অক্টোবর উত্তরায় পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে। ২৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে বিপুল লোক জমায়েতের লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। এর বাইরে ‘উন্নয়ন ও শান্তি’সমাবেশের নিয়মিত কর্মসূচি তো থাকবেই। গতকাল বৃহস্পতিবারও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ হয়েছে।

এদিকে ২৯ অক্টোবর মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে মতিঝিলে সমাবেশে বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আয়োজনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে সবচেয়ে বেশি লোক জমায়েতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মহানগর উত্তরও অংশ নেবে। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগের অধীন বিভিন্ন জেলা থেকে লোক জমায়েত করার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের নেতৃত্বে পাঁচটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগও তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ঢাকার প্রতিটি আসনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে যুবলীগ। ১৬ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুব সমাবেশ করবে সংগঠনটি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর