বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন- ওবায়দুল কাদের
ধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তোলা সেলফি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য প্রদান করেছেন, তা শুভ বোধসম্পন্ন কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে জাতি প্রত্যাশা করে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতি এ কথা জানান তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী পদক্ষেপ ও গৃহীত নীতির কারণে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ যে সফলতা অর্জন করেছে তা নজিরবিহীন। সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় অসাধারণ যোগ্যতা ও দক্ষতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বনেতাদের সম্মানসূচক অভিব্যক্তিতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। যার মধ্যদিয়ে বিশ্বনেতারা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁসহ বিশ্বনেতারা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর গৌরবোজ্জ্বল উপস্থিতি দেশের আপামর জনগণকে অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত ও গর্বিত করেছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তোলা সেলফি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য প্রদান করেছেন, তা শুভ বোধসম্পন্ন কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে জাতি প্রত্যাশা করে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রসমূহের সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি বিশ্বনেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সুদক্ষ নেতৃত্ব, অসাধারণ ব্যক্তিত্ব এবং কর্মকুশলতার উজ্জ্বল প্রভায় বিশ্বনেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন শেখ হাসিনা। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার মেধা, মনন, সততা ও সাফল্যে একসময়ের দারিদ্র্যপীড়িত অনিশ্চিত অর্থনীতির বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে দেশের জনগণ ক্ষমতার উৎস। জনগণই একটি রাজনৈতিক সংগঠনের প্রধান শক্তি। প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন জনগণের ওপরই নির্ভর করে এবং জনমতকে ধারণ করেই সুসংগঠিত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের তোলা সেলফি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা আনবে এমনটি নয়, তবে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের ইঙ্গিত বহন করে। বর্তমান সরকারের কোনো বন্ধু নেই বলে বিএনপি নেতারা এতদিন ধরে যে অপপ্রচার চালিয়ে আসছেন, তার যথার্থ জবাব এই সেলফিতেই প্রতিফলিত হয়েছে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টই নয়, অন্যান্য বিশ্বনেতারাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উষ্ণ মনোভাব নিয়ে কুশল বিনিময় করেছেন, যার ছবি ও সংবাদ এরই মধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশপ্রেমিক কোনো ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিক সংগঠন দেশকে বন্ধুহীন করার আকাঙ্ক্ষা লালন-পালন করতে পারে না। কিন্তু বিএনপি এই হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকে দীর্ঘদিন ধরে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির নেতারা লাগাতার তাদের বিদেশি প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছে। একই সঙ্গে তারা বিদেশি প্রতিনিধি এবং সংস্থাসমূহের নিকট বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তাদের সরবরাহকৃত বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্যে বিভ্রান্ত হয়ে কেউ কেউ বিরূপ মন্তব্য করলে বিএনপি পুলকিত বোধ করে এবং বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে দাঁড় করানোর চক্রান্ত করে। আবার যখন সত্য উন্মোচিত হয় তখন তারা নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বোনে।’
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে কথা বলেছেন! এই ভিসা নীতিকে সরকারের পক্ষ থেকেও সাধুবাদ জানানো হয়েছে। ভিসা নীতি নিয়ে সরকার কখনো কোনো অস্বস্তিতে ছিল না, বরং ভিসা নীতির কারণে তথাকথিত আন্দোলনের নামে বিএনপির আগুন সন্ত্রাস এবং ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতির ওপর একটি বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত সাফল্য ও অগ্রগতির নতুন নতুন মাইলফলক অতিক্রম করছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির সামনে যে অঙ্গীকার করেছেন তিনি তা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। একসময় বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মঙ্গা-খরাপীড়িত এবং খাদ্য ঘাটতিতে জর্জরিত ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশ ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে সে সংকট জয় করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সরব উপস্থিতি তারই প্রমাণ। বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের সম্মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রমের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা, কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’
তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮.৭ শতাংশে এবং অতি দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশের শতকরা ২৯ ভাগ মানুষ বিভিন্ন ভাতার আওতায় এসেছে। সারা দেশে ১০ লাখের বেশি ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে গৃহ প্রদান করা হয়েছে। পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েসহ একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে ধারাবাহিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির মধ্য দিয়ে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ আজ একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’