আওয়ামী লীগ-বিএনপির সমাবেশ বুধবার
নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি কর্মসূচি অব্যাহত রেখে রাজপথেই সমাধানের কথা বলছে। আওয়ামী লীগও তাদের সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অবস্থানে অটল থেকে রাজপথে কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের রাজপথে শক্তি প্রদর্শনের মহড়ার শেষ কোথায় এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন বিরোধীদলের মূল দাবিতে সমঝোতা বা সমাধানের ব্যাপারে সম্ভাবনা আছে কী না-এসব প্রশ্নে নানা আলোচনা এখন চলছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি সমাবেশগুলোতে যতটা লোকসমাগম ঘটাচ্ছে, আওয়ামী লীগও তাদের সমাবেশ গুলোতে তারচেয়েও বেশি লোকসমাগম ঘটানোর চেষ্টা করছে। উভয় দলের কর্মসূচি-পাল্টা সমাবেশকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপি একাধিক সমাবেশ করার পর আবারও বুধবার ১৮ অক্টোবর দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একদফা দাবিতে সমাবেশ করতে যাচ্ছে। সমাবেশ চলাকালিন সময়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কৃর্তক গৃহিত ‘লন্ডনি বার্তা’ মাধ্যমে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
পক্ষান্তরে একইদিন একই সময়ে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেইটে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ কর্মসূচি আছে। ঢাকা মহানগর (উত্তর-দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল এর ৬০ তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে এই শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের আয়োজন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি’র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ।
এদিকে একইদিনে রাজধানীতে পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক সমাবেশ থেকে দলগুলো কী অর্জন করতে চায় এমন আলোচনা-সমালোচনা এখন তুঙ্গে। তখন ‘ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলন’ এক যুগ ধরে বিএনপি নেতাদের এমন হুংকার প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরলেও এবার তারা আসন্ন দুর্গাপূজার পর চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর অংশ হিসেবে ঢাকা শহর কেন্দ্রীক নানামুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। কর্মসূচি সফল করতে রাজধানীতে ১০ লাখ লোক সমাগমের টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতারা।
নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে এলেও কার্যত বিএনপির আন্দোলন সরকারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি। বিএনপির আন্দোলনের ধরন বা আন্দোলন করার সক্ষমতা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের উপহাসের পাত্রও হতে হয়েছে। তাই চূড়ান্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নে সুবিধা-অসুবিধা সবকিছুই বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। নেতাদের গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পূজার পর গতানুগতিক নয়, সরকারের পতন ঘটাতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা হবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির শেষ বার্তায় কোনো কাজ হবে না। শেখ হাসিনাই আবার ক্ষমতায় আসবেন। বিএনপি ক্ষমতা পাবে, এমন বার্তা কোথা থেকে পেল প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যতদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে, ততদিন কোনো বার্তা দিয়ে, কোনো আল্টিমেটাম দিয়ে লাভ হবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। সংবিধান আমাদের নির্বাচনের চালিকাশক্তি। সংবিধান যা বলবে, আমরা তা-ই করব। বন্ধুদের পরামর্শ শুনব, কিন্তু সংবিধান থেকে আমরা এক চুলও নড়ব না। এটা হলো আমাদের থেকে বার্তা। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে নির্বাচন হবে, দেশি-বিদেশি বন্ধুদেরও আশ্বস্ত করলাম, ইলেকশন ফ্রি, ফেয়ার ও একসেপ্টেবল হবে।’