মালদ্বীপকে হারিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স মন ভরাতে পারছে না। তবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রাক বাছাই পর্বে ঠিকই মান রেখেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। মালদ্বীপকে ফিরতি লেগে ২-১ গোলে হারিয়ে নিশ্চিত করেছে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গ্রুপ পর্বে খেলার সুযোগ।
প্লে অফ পর্বের হোম ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করেছে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে মালদ্বীপের বিপক্ষে আগে গোল পেলেও লিড ধরে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। শুরুতে রাকিব হোসেন গোল করেছিলেন। তারপর বিরতির আগে সমতায় ফেরে মালদ্বীপ। বিরতির পর ফাহিমের গোলেই পূরণ হয় মূল বাছাই পর্বে খেলার স্বপ্ন। তাতে ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর আবারও ঘরে মাঠে মালদ্বীপকে বধ করলো বাংলাদেশ।
ঢাকার ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ দল এখন আগামী এক বছর নির্ভার। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পরের পর্বে গ্রুপ আই-তে এখন ৬টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। তাদের গ্রুপে আছে ফিলিস্তিন, লেবানন ও অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচটি হতে যাচ্ছে ১৭ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেলবোর্নে।
মঙ্গলবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় কোচ হাভিয়ের কাবরেরা সাদের ওপর ভরসা রেখে একাদশ ঘোষণা করেছিলেন। সাদ একাদশে ঢুকলে কপাল পুড়ে ডিফেন্ডার ইসা ফয়সালের। এছাড়া আগের ম্যাচের ১০ জনকে শুরু থেকে খেলিয়েছেন কাবরেরা। বাংলাদেশ দলকে আজ ৪-৪-২ আবার ৪-২-৩-১ ছকে খেলতে দেখা গেছে।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হওয়ায় শেষটায় উত্তেজনাও ছড়িয়েছে। ম্যাচে দুই দলের একজন করে খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখেছেন।
দুই দলই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ নির্ভর খেলেছে। দ্বিতীয় মিনিটে মালদ্বীপ চেষ্টা করেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। উল্টো ঘড়ির ১১ মিনিটে স্বাগতিকরা সুযোগ পেয়ে এগিয়ে গেছে। বাঁ প্রান্ত থেকে সাদের পাসে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের প্রায় বাইলাইন থেকে করা কাটব্যাকে রাকিব হোসেন চলতি বলে দারুণ এক প্লেসিংয়ে জাল কাঁপিয়েছেন।
চার মিনিট পর ব্যবধান বাড়তে পারতো। কিন্তু জামালের ক্রসে ফাহিমের শট এক ড্রপের পর জালে ঢোকার মুহূর্তে সেটি প্রতিহত করেছেন গোলকিপার হুসেইন শরীফ।
২১ মিনিটে মালদ্বীপ ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে। হামজা মোহাম্মদ বক্সে ঢুকে চার ডিফেন্ডারকে কাটানোর চেষ্টা করে লক্ষ্যে শট নিলেও মোহাম্মদ হৃদয় গোল হতে দেননি।
২৯ মিনিটে হৃদয়ের লং পাস এক ডিফেন্ডারের মাথা ছুঁইয়ে ফাঁকায় পেয়ে যান রাকিব। কিন্তু বক্সে গোলকিপারকে একা পেয়েও তা জালে পাঠাতে পারেননি রাকিব। বল গোলকিপারের প্রসারিত করা ডান পায়ে লাগলে তার গতি শ্লথ হয়ে যায়।
চার মিনিট পর হামজা মোহাম্মদের কোনাকুনি শট গোলকিপার মিতুল মারমা ঝাঁপিয়ে পড়ে বিপদমুক্ত করেন। ৩৪ মিনিটে আবারও আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। তবে জামালের ছোট ক্রসে রাকিবের প্লেসিং পোস্টে লাগলে গোল পাওয়া হয়নি।
খেলার ধারাতেই মালদ্বীপ সমতা ফেরায় ৩৬ মিনিটে। হামজার কর্নার ফাহিম ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। তখন ঠিক পেছনে থেকে জায়গায় দাঁড়িয়ে আইসাম ইব্রাহিম মাপা হেডে মিতুল মারমাকে পরাস্ত করেন।
বিরতির পরই একটি করে লাল কার্ড দেখেছে দুই দল। তারপরও গোল করে আবার এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৪৬ মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে ওভারল্যাপ করে উঠে এসে সাদ উদ্দিনের কোনাকুনি শট গোলকিপার ঠিকমতো প্রতিহত করতে পারেননি। তাতে ফাহিম বাঁ পায়ের জোরালো শটে জাল কাঁপাতে ভুল করেননি।
৫৯ মিনিটে বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদ আসে লাল কার্ড। দলকে বিপদে ফেলে দেন মোহাম্মদ সোহেল রানা। মালদ্বীপের সীমানায় এসে প্রতিপক্ষের একজনকে অহেতুক বিপজ্জনক স্লাইড করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মার্চিং অর্ডার পান তিনি। বাকি সময়টুকু বাংলাদেশকে ১০ জন নিয়ে খেলতে হয়েছে।
শেষ দিকে এসে মালদ্বীপ চাপ সৃষ্টি করেছে যদিও। তবে সফল হতে পারেনি। যোগ করা সময়ে জনিকে ফাউল করলে মালদ্বীপের আহনাফ রশীদ লাল কার্ড দেখেন। শেষ সময় দুই দল ১০ জন নিয়ে খেললেও শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশ।