শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ অপরাহ্ন

অনড় আওয়ামী লীগ-বিএনপি, জাপা চায় সংলাপ

Reporter Name / ৪৩৯ Time View
Update : শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩

ভোট প্রস্তুতির মধ্যে ঘরে-বাইরে রাজনৈতিক সমঝোতা-সংলাপের দাবিও বাড়ছে। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে ১২ জুলাই থেকে ‘এক দফা’ আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিএনপি। এ আন্দোলন ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ নিয়ে যেতে আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার হুঁশিয়ারি, সেদিন থেকে আন্দোলনের ‘মহাযাত্রা শুরু হবে।’ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আর থেমে থাকব না।

বিএনপির দাবি নাকচ করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাই থাকবেন। ভোটে জিতে তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন।

তিনি বলেন, ‘বার্তা দিয়ে দিচ্ছি, নির্বাচনের পর আল্লাহর রহমতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে শেখ হাসিনা আবারও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসবেন। এটাই আমাদের বার্তা। অন্যথা হবে না।’

অপরদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে গাইবান্ধায় এক অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মনোভাব কিছুটা নরম করতে হবে। নির্বাচনের জন্য সরকারের সংলাপের ব্যবস্থা করা উচিত। এজন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি জানান, কিছু বিদেশি শক্তি সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে আবার কিছু বিদেশি শক্তি সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে।

এদিকে জাতীয় নির্বাচন ‘অংশগ্রহণমূলক ও সংঘাতহীনভাবে’ আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রধান নির্বাচনী বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা ও অর্থবহ আলোচনার সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল।

বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ এবং বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠকের পর রোববার এক বিবৃতিতে বক্তৃতা-বিবৃতির ব্যাপারে ‘সহনশীল’ হয়ে প্রধান নির্বাচনী বিষয়গুলো নিয়ে সংলাপসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করে তারা ।

এ পরামর্শের পর প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি বলছে, তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়, সংসদ ডিজলভ করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ চায়। আমরা তো এই শর্তযুক্ত সংলাপে রাজি হব না।… শর্তযুক্ত কোনো সংলাপের ব্যাপারে আমাদের কোনো চিন্তাভাবনা নেই। শর্ত তারা প্রত্যাহার করলে তখন দেখা যাবে।’

এর আগে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা এলে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসার কথা জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেছেন, সেই সরকার কীভাবে গঠন হবে, আলোচনা হতে পারে তা নিয়ে। এর জবাবে গত রোববার ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যদি কোনো শর্ত ছাড়া সংলাপ করতে চায়, আওয়ামী লীগ তখন ‘ভেবে দেখবে’।

এর বক্তব্য পাল্টা বক্তব্যের মধ্যে ঢাকা সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে তার সরকারের অবস্থানের কথা বলেন। তার সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, নির্বাচন ‘অংশগ্রহণমূলক ও সহিংসতামুক্তভাবে’ আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অর্থবহ সংলাপের যে সুপারিশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মিশন করেছে, সে ব্যাপারে মার্কিন অবস্থানও অনেকটা একই রকম।

এদিকে সংবাদমাধ্যমের ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে আলোচনার জন্য তৈরি ধারণাপত্রে ইসি বলছে, প্রত্যাশিত সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে মতভেদের নিরসন হয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধানতম দলগুলো স্ব স্ব সিদ্ধান্ত ও অবস্থানে অনড়। রাজপথে মিছিল, জনসমাবেশ ও শক্তি প্রদর্শন করে স্ব স্ব পক্ষে সমর্থন প্রদর্শনের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে প্রত্যাশিত মীমাংসা বা সংকটের নিরসন হচ্ছে বলে কমিশন মনে করে না। বিষয়টি রাজনৈতিক। নির্বাচন কমিশনের এক্ষেত্রে করণীয় কিছু নেই।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা বলছেন, তফসিল ঘোষণার কার্যক্রমও শেষ ধাপে রয়েছে। নির্বাচনী সামগ্রী আগামী সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ে যাওয়া শুরু করবে। দিন যত যাচ্ছে কর্মযজ্ঞের পরিমাণ বাড়ছে। এরই মধ্যে বিবদমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে সমঝোতা-সমাধানের আশায় তাকিয়ে রয়েছে কমিশন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর