এনডিসি প্রশিক্ষণার্থীদেরকে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
ডেস্ক রিপোর্ট : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সের (এএফডব্লিউসি) প্রশিক্ষণার্থীদেরকে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ রবিবার (৩ ডিসেম্বর ২০২৩) সকালে মিরপুর ক্যান্টনমেন্টের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে (এনডিসি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “বিশ্বায়নের যুগে, উন্নয়নের গতি বজায় রাখতে দক্ষ ও চৌকস জনশক্তি আবশ্যক . . . এনডিসি’র প্রশিক্ষণ কোর্স থেকে অর্জিত জ্ঞানের মাধ্যমে আপনার জাতিকে গড়ে তুলতে এবং আপনার দেশকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করুন।”
সাহাবুদ্দিন আরো বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণ ও বিকাশ এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের ফলে, জনগণ ও জাতির আশা-আকাক্সক্ষা পূরণের জন্য বেসামরিক ও সামরিক আমলাতন্ত্রের পাশাপাশি সরকারেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে।
“বড় পদ সাধারণত উচ্চতর দায়িত্বের সঙ্গে আসে”- উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই এনডিসি কোর্স প্রশিক্ষনার্থীদেরকে নীতি-নির্ধারণ, নিরাপত্তা, যুদ্ধ কৌশল ও উন্নয়নের জ্ঞান অর্জনে তাদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেবে।
এই কোর্সগুলো একজন নিখুঁত, দূরদর্শী নেতা ও ভালো কর্মকর্তা হিসেবে কাক্সিক্ষত সমন্বয়, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা, শৃঙ্খলা ও দক্ষতার সাথে কাজ করতে সকলের পেশাদার আত্মবিশ্বাসকে উন্নত করবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা করেন।
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র দক্ষ, জ্ঞানী এবং আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরাই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে টিকিয়ে রাখতে, দারিদ্র্যকে অতিক্রম করতে এবং একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তা করতে পারেন।’
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘ভিশন ২০৪১’ প্রসঙ্গে সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান ‘অর্থনৈতিক মিরাকল’ এবং ‘ডেভেলপমেন্ট মার্ভেল’ দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল এবং দারিদ্র্যের অনুপ্রেরণামূলক প্যারাগন হিসেবে তুলে ধরেছে বিশ্বব্যাংক।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।
তিনি পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, বঙ্গবন্ধু টানেল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া কারখানাসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।
এ সকল উন্নয়নের ধারাগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির বহিঃপ্রকাশ বলে অভিহিত করেন রাষ্ট্রপতি।
দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ‘জনবান্ধব’ উল্লেখ করে- এ বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী দেশপ্রেম, জাতির প্রতি অঙ্গীকার এবং শান্তির নিশ্চয়তার ও প্রতীক।
এ বছর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৪৩ জন, বেসামরিক প্রশাসনের ১৩ জন এবং ১৭ টি বন্ধুপ্রতিম দেশের ২৯ জনসহ এনডিসি কোর্সে ১৪১ জন অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “আপনারা ২৯ জন বিদেশী প্রশিক্ষণার্থী পেশাগত সম্পর্কের বাইরে গিয়েও সামাজিক বন্ধন ও বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন এবং আপনারা নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশের ‘শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবে কাজ করবেন।”
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট এয়ার ভাইস মার্শাল মুঃ কামরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা, রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ, অনুষদ, স্টাফ অফিসার এবং এনডিসি ও এএফডব্লিউসির কোর্স সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে রাষ্ট্রপতি একটি কেক কাটেন এবং এনডিসি এবং এএফডব্লিউসি স্নাতকদের সাথে ফটো সেশনে অংশ নেন।