চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
চিয়া সিড পুষ্টিকর খাবার। এতে আছে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালংশাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম, মুরগির ডিম থেকে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন, স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩।
মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে চিয়া নামে এক ধরনের গাছ জন্মায়। পুদিনা পরিবারের ছোট এই গাছটির বীজ হচ্ছে চিয়া সিড। সাদা, কালো ও বাদামি রঙের চিয়া সিডগুলো আকারে খুবই ছোট, অনেকটা তিলের মতো। পানিতে ভেজালে চিয়া সিড ফুলে উঠে ১২ গুণ পর্যন্ত বড় হতে পারে।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা : প্রাচীনকাল থেকে চিয়া সিড মানুষের রসনা তৃপ্ত করে আসছে। অ্যাজটেক এবং মায়ান সভ্যতার সময়ে চিয়া সিড খাবার প্রচলন ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। ক্ষুধা মেটানোর পাশাপাশি চিয়া সিড রূপচর্চা করতে ব্যবহার করা হতো। এর অনেক ঔষধিগুণ আছে বলে বিশ্বাস করত অ্যাজটেক ও মায়ান আদিবাসীরা। সে কারণে সাধারণ অসুখে চিয়া সিড খাবার প্রচলন ছিল তাদের মধ্যে।
চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ : পুষ্টিবিদরা চিয়া সিডকে সুপারফুড নামে ডাকতে ভালোবাসেন। কারণ এতে আছে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাফিক অ্যাসিড নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা : চিয়া সিড পুষ্টিকর খাবার। এতে আছে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম, মুরগির ডিম থেকে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন, স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩।
পুষ্টিকর এই খাবারটি সপ্তাহের সাত দিনই খাওয়া যায়। তবে ৩-৪ দিন খেলেও শরীরে উপকারে আসে।
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা : পুষ্টিবিদরা জানান, চিয়া সিডে থাকা ওমেগা-৩ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে কাজ করে। দিনে দুই চা চামচ চিয়া সিড শরীরের শক্তি দেয় এবং কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় চিয়া সিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে। মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করার মাধ্যমে এটি ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটি রক্তে চিনির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে বলে ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমে।
হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় চিয়া সিড দারুণ কাজ করে। কারণ এতে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। চিয়া সিড কোলন পরিষ্কার রাখতে কাজ করে বলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। চিয়া সিড শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে আনে। দূর করে অ্যাসিডিটির সমস্যা। চিয়া সিড ভালো ঘুম হতেও সাহায্য করে বলে বিশ্বাস করেন চিকিৎসকরা। শুধু কি তাই! হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা কমায়। সুন্দর রাখে ত্বক, চুল ও নখ।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম: চিয়া সিড স্বাদ ও গন্ধবিহীন একটি খাবার। এটা খাওয়ার জন্য রান্না করারও দরকার হয় না। পানিতে ভিজিয়ে সহজেই খাওয়া যায় চিয়া সিড। চাইলে ওটস, পুডিং, জুস, স্মুথি ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নেয়া যায়। এ ছাড়া কেউ চাইলে টকদই, সিরিয়াল, রান্না করা সবজি বা সালাদের ওপরে ছড়িয়েও খেতে পারেন।
চিয়া সিড কুসুম গরম পানিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে চিয়া সিডসহ পানীয়টি পান করুন।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা: ফ্রুট সালাদের সঙ্গে খাওয়া যায় চিয়া সিড। চাইলে স্মুথি বানিয়ে খাওয়া যায়। টক দই, চিয়া সিড ও শসা দিয়ে স্মুথি বানিয়ে বিকেলে নাশতা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে সুপারফুডটি।
২ কাপ নারকেলের পানির সঙ্গে পছন্দের ফলের রসের সঙ্গে ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ চিয়া বীজ দিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে নিন। প্রয়োজনে পানিও যোগ করতে পারেন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে খেয়ে নিন।