আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে নাহিদা
বাংলাদেশের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির মাস সেরার পুরস্কার জেতা নাহিদা আক্তার এবার পেলেন আরেকটি বড় স্বীকৃতি। বছরজুড়ে চমৎকার পারফরম্যান্সে নারীদের আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা করে নিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। নারীদের বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে জায়গা করে নেওয়া বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার নাহিদা। এর আগে ২০১৮ সালের সেরা টি-টোয়েন্টি একাদশে ছিলেন লেগ স্পিনার রুমানা আহমেদ। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থা আইসিসি মঙ্গলবার ২০২৩ সালের সেরা নারী ওয়ানডে দল ঘোষণা করেছে। এতে সর্বোচ্চ পাঁচজন ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে। তাসমান সাগর পারের আরেক দেশ নিউ জিল্যান্ড থেকে আছেন দুইজন। বাংলাদেশ ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড থেকে জায়গা পেয়েছেন একজন করে। গত বছর মেয়েদের ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন নাহিদা। ১১ ম্যাচে ১৯.৪৫ গড় ও ওভারপ্রতি ৪.০৮ রান দিয়ে ২০ উইকেট নেন তিনি। বছরের শুরু থেকে দারুণ ছন্দে ছিলেন নাহিদা। তবে ওয়ানডেতে সেরা পারফরম্যান্সটা করেন তিনি গত নভেম্বরে। ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে বড় অবদান রেখে হন সিরিজ সেরা। তিন ম্যাচের ওই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩০ রানে ৩ উইকেটের পর শেষটিতে ২৬ রান খরচায় ধরেন আরও তিনটি শিকার। মাঝে দ্বিতীয় ম্যাচে তার কাঁধে পড়ে সুপার ওভারে বোলিংয়ের দায়িত্ব। স্রেফ ৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন নাহিদা। ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। ওই পারফরম্যান্স তাকে এনে দেয় নভেম্বরের সেরার সম্মাননা। এবার তিনি জায়গা করে নিলেন বর্ষসেরা দলেও। মেয়েদের এই দলে ওপেনার হিসেবে আছেন অস্ট্রেলিয়ার ফোবি লিচফিল্ড ও শ্রীলঙ্কার চামারি আতাপাত্তু। গত বছর ২০ বছর বয়সী লিচফিল্ড ১৩ ওয়ানডে খেলে এক সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে ৫৩.৮৮ গড়ে করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮৫ রান। বর্ষসেরা দলের অধিনায়ক আতাপাত্তু ৮ ওয়ানডেতে ৬৯.১৬ গড়ে করেছেন ৪১৫ রান, তার সেঞ্চুরি দুটি। টপ অর্ডারের আরেকজন অস্ট্রেলিয়ার এলিস পেরি। ১০ ইনিংস ব্যাটিং করে ৫ ফিফটি ও ৬৬.৭১ গড়ে গত বছর তিনি করেন ৪৬৭ ওয়ানডে রান। ২ সেঞ্চুরি ও ৬৭.৬২ গড়ে বছরের সর্বোচ্চ ৫৪১ রান করা নিউ জিল্যান্ডের অ্যামেলিয়া কারও আছেন দলে। কিপার হিসেবে আছেন অস্ট্রেলিয়ার বেথ মুনি। তিনি গত বছর রান করেছেন ১১ ইনিংসে ৪৩৯। ইংল্যান্ডের ন্যাট সিভার-ব্রান্ট ৫ ইনিংসে ৩ সেঞ্চুরিতে ৩৯৩ রান করে জায়গা করে নিয়েছেন। গত বছর ওয়ানডেতে তার ব্যাটিং গড় ছিল ১৩১! অস্ট্রেলিয়ার স্পিনিং অলরাউন্ডার অ্যাশলি গার্ডনারও বর্ষসেরা দলে পেয়েছেন জায়গা। ৭ ইনিংসে ১৮৮ রান করার পাশাপাশি অফ স্পিনে বছরের সর্বোচ্চ ২৪ শিকার ধরেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার আরেক অলরাউন্ডার অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডও আছেন দলে। ৭ ইনিংসে ২৬৩ রান করার সঙ্গে পেস বোলিংয়ে তার শিকার ১৩ উইকেট। সেখানে তার সঙ্গী দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং অলরাউন্ডার ন্যাডিন ডি ক্লার্ক। ব্যাট হাতে ১৮১ রান করার পাশাপাশি ১৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দলে বিশেষজ্ঞ পেসার নিউ জিল্যান্ডের লিয়া তাহুহু। গত বছর ৯ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে থাকা গার্ডনার, আতাপাত্তু, সিভার-ব্রান্ট ও অ্যামেলিয়া কার বছরের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের লড়াইয়েও আছেন।
আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ানডে নারী দল: ফোবি লিচফিল্ড (অস্ট্রেলিয়া), চামারি আতাপাত্তু (শ্রীলঙ্কা) (অধিনায়ক), এলিস পেরি (অস্ট্রেলিয়া), অ্যামেলিয়া কার (নিউ জিল্যান্ড), বেথ মুনি (অস্ট্রেলিয়া) (উইকেটকিপার), ন্যাট সিভার-ব্রান্ট (ইংল্যান্ড), অ্যাশলি গার্ডনার (অস্ট্রেলিয়া), অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড (অস্ট্রেলিয়া), ন্যাডিন ডি ক্লার্ক (দক্ষিণ আফ্রিকা), লিয়া তাহুহু (নিউ জিল্যান্ড), নাহিদা আক্তার (বাংলাদেশ)।