রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

মায়ের মৃত্যুর পর বাবা-বোনকে আগলে রাখা লামিশা মারা গেল আগুনে

স্টাফ রিপোর্টার : / ২৬৪ Time View
Update : শনিবার, ২ মার্চ, ২০২৪

২০১৮ সালে অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান মা। এরপর ছোট বোন আর বাবাকে আগলে রাখতেন বড় বোন লামিশা ইসলাম। দুই কন্যা সন্তানের কথা চিন্তা করে পুলিশ কর্মকর্তা বাবাও আর বিয়ে করেননি। লামিশা স্কুল-কলেজ পেরিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বাংলাদেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ বুয়েটে। মেধাবী এ শিক্ষার্থীর জীবন হঠাৎ থমকে গেল বেইলি রোডের আগুনে। এ ঘটনায় লামিশার বাবা পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্ল্যানিং-১) নাসিরুল ইসলাম হয়ে পড়েছেন বাকরুদ্ধ। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে স্বজন-সহপাঠীদের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন বাবার সহকর্মীদের অনেক পুলিশ কর্মকর্তা। জানা গেছে, ২০১৮ সালে নাসিরুল ইসলামের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দুই কন্যা সন্তানের দিকে তাকিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। সন্তানদের নিয়ে থাকতেন রমনার পুলিশ কমপ্লেক্সে। কন্যাদের মানুষের মতো মানুষ করতে মায়ের ভূমিকা পালন করতেন বাবা। স্বপ্ন ছিল কন্যারা বাবাকে ছাড়িয়ে যাবেন পৌঁছাবে অনন্য উচ্চতায়। বড় মেয়ে সেই পথেই হাঁটছিলেন। বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগে ভর্তিও হয়েছিলেন। কিন্তু আগুন মুহূর্তেই কেড়ে নিল লামিশার প্রাণ। একাধিক পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, লামিশা বাসার পাশেই ওই ভবনের কোনো একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন। আগুন লাগার পর তিনি দৌঁড়ে ছাদের দিকে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাদে উঠতে পারেননি। নিঃশ্বাসের সঙ্গে ধোঁয়া গিয়ে শ্বাসনালি পুড়ে মারা যান। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ও বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারিও রমনা কমপ্লেক্সের শিমুল ভবনের লিফটে লামিশার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তখন বুঝতে পারিনি মৃত্যু তার এত কাছাকাছি। ঘটনার পর পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছিলেন, আমাদের একজন সহকর্মীর মেয়ে মারা গেছেন। সেই মেয়েটিই লামিশা ইসলাম। স্বজনরা জানান, হলিক্রস কলেজ থেকে পাস করে বুয়েটের কেমিকৌশল ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী লামিশার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে। বুয়েটের বন্ধু নাহিয়ান আমিনের সঙ্গে ওই ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন। আগুনে দুজনই মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনে আগুন লাগে। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভবনজুড়ে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন কয়েকজন। মৃত্যু সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর