যাওয়ার কথা ছিল ইতালি, আগুনে শেষ পুরো পরিবার
ঢাকার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে একই পরিবারের পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলার সরাইল থানার শাহবাজপুরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীসহ সবাই নিহতের বাড়িতে এসে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার শাহবাজপুরে এলাকার বাসিন্দা। কাউসার পরিবারের তিন ভাই এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪২) দীর্ঘদিন ইতালিতে ব্যবসা করতেন। মাসখানেক আগে ইতালি থেকে দেশে আসেন। ইতালিতে স্থায়ীভাবে (গ্রিন কার্ড) থাকার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি স্ত্রী ও তিন সন্তানদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ভিসাও হয়ে গিয়েছিল সবার। কিন্তু ইতালি আর যাওয়া হলো না তাদের। বেইলি রোডের আগুনে পুড়ে স্ত্রী-সন্তানসহ মারা গেছেন মোবারক। স্বজনরা জানান, সবাইকে নিয়ে ডিনার করতে বেইলি রোডে গিয়েছিলেন মোবারক। সঙ্গে ছিল স্ত্রী স্বপ্না, দুই মেয়ে সৈয়দা কাশফিয়া ও সৈয়দা নূর এবং একমাত্র ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ। আগুনে পুড়ে সবাই মারা গেছেন। ঘটনাটি একেবারে মর্মান্তিক। পরিবারটি শেষ হয়ে গেলো। এরকম দুর্ঘটনা যেন আর কারো পরিবারের না হয়। নিহতের কাউসারে মা সৈয়দ হেলেনা বেগম বলেন, আমার ছেলেসহ পুরো পরিবার আগুনে পড়ে শেষ হয়ে গেছে। আমি বেঁচে থেকে আর কী করবো। আমার ছেলে রেখে আল্লা আমারে নিয়ে যাইত। আমি এই শোক সইব কী করে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৩টার দিকে একই পরিবারের পাঁচজনের লাশ তাদের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। লাশগুলো চারটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের খন্দকার পাড়া আনা হয়। লাশ আসা মাত্র শোকার্ত গ্রামবাসীর ঢল নামে। এ সময় তাদের কান্নায় এই শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাদ আসর জানাজার পর বাড়ির পাশে কবরস্থানে দাফন করা হবে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।