শঙ্কামুক্ত উত্তরের ঈদযাত্রা : খুলে দেওয়া হলো তিন ওভারপাস ও সেতু
উত্তরের ঈদযাত্রা নির্ঝঞ্ঝাট করতে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে খুলে দেওয়া হলো তিন ওভারপাস ও একটি সেতু। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সে ওভারপাসগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে সিরাজগঞ্জ প্রান্তে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড. জান্নাত আরা হেনরী এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামিম তালুকদার লাবু, জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানসহ সাসেক-২ প্রকল্পের কর্মকর্তারা। উদ্বোধন হওয়া ওভারপাসগুলো হলো বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে ৩৯ মিটার দৈর্ঘ্যের মুলিবাড়ী ওভারপাস, পাঁচিলা ওভার পাস, ৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দাতপুর ওভারপাস ও ৫৬ মিটার দৈর্ঘ্যের দাতিয়া সেতু। এদিকে ঈদ এলেই ঘরেফেরা উত্তরাঞ্চলগামী মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ানো এই মহাসড়কে স্বস্তি ফিরে আনবে উন্মুক্ত করে দেওয়া নতুন ওভারপাস ও সেতুগুলো। ঈদ উপলক্ষে নির্বিঘ্নেই ঘরে ফিরতে পারবেন যাত্রীরা এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। এদিকে সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ ছিল। যান চলাচল স্বাভাবিক ও নিরাপদ রাখতে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করেন হাইওয়ে ও জেলা পুলিশের সদস্যরা। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি এম এ ওদুদ বলেন, এই ওভারপাস ও সেতুগুলো খুলে দেওয়ায় ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। আশা করছি আমাদের এলাকায় আর কোনো যানজট বা দুর্ভোগের শঙ্কা থাকবে না। সাসেক-২ প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর চারলেন মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে তিনটি ওভার পাস ও একটি সেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এতে করে এ অঞ্চলে ঈদযাত্রায় দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কে ৮ ওভারপাস ও ২ সেতু চালু: এদিকে মেঘনা টোল প্লাজায় ১২টি বুথে ইটিসি কার্যক্রম চালুসহ এলেঙ্গা- হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কে নির্মিত একটি রেল ওভারপাস, সাতটি ওভারপাস ও দুটি সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শনিবার সকালে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এগুলো উন্মুক্ত করেন তিনি। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের টোল প্লাজার সব লেনে ইটিসি (ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন) কার্যক্রম চালুকরণসহ মেঘনা সেতু টোল প্লাজা-২ এর উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতু ও মেঘনা-গোমতী সেতু টোল প্লাজায় ২০১৬ সাল থেকে সীমিত পরিসরে একটি করে লেনে ইটিসি কার্যক্রম চালু আছে। মেঘনা সেতুর টোল প্লাজায় বিদ্যমান কম সংখ্যক টোল বুথসমূহের মাধ্যমে যানবাহন থেকে টোল কালেকশন বিশেষ করে ঈদের সময় যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষমাণ থেকে টোল পরিশোধ করার কারণে জনভোগান্তি বেড়ে যায়। সে প্রেক্ষাপট বিবেচনায় টোল কালেকশনকে অধিকতর প্রযুক্তি নির্ভর করা এবং জনভোগান্তি লাঘবে বিদ্যমান মেঘনা সেতু টোল প্লাজার পাশে নতুন আরেকটি টোল প্লাজা নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঢাকা জোনের আওতায় আনুষঙ্গিক অন্যান্য সুবিধাসহ প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন এ টোল প্লাজায় ছয়টি নতুন টোল কালেকশন বুথের সংস্থান রয়েছে। ফলে বিদ্যমান পুরাতন টোল প্লাজা ছয়টি এবং নব নির্মিত মেঘনা টোল প্লাজা-২ এর নতুন ছয়টিসহ সর্বমোট ১২টি টোল বুথের মাধ্যমে টোল কালেকশন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। উল্লেখ্য, এ ১২টি টোল বুথের সবকটিতেই ক্যাশ ও ক্যাশলেস (ইটিসি) ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টোল দেওয়া যাবে। ফলে যে-সব যানবাহন ইটিসি পদ্ধতিতে টোল দেবে তারা বিরতিহীনভাবে অর্থাৎ টোল প্লাজায় না থেমেই দ্রুততম সময়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। এতে টোল প্লাজায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টোল দেওয়ার চিরাচরিত ভোগান্তি আর থাকবে না। ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের গোমতী টোল প্লাজায়ও সব লেনে ইটিসি চালুকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা শিগগিরই চালু হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন টোল প্লাজাসমূহের টোল কালেকশন সিস্টেমে এ উন্নত প্রযুক্তি/আধুনিকায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে।