পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
স্টাফ রিপোর্টার ॥ পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠ পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হঠাৎ দাম বৃদ্ধির পেছনে দায়ী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে আলোচ্য সূচির বাইরে আলাদা করে সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ দেন সরকার প্রধান। বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। সচিব বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে উনি (প্রধানমন্ত্রী) ক্যাবিনেটে না, আলাদাভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বলেছেন। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন- মাঠ পর্যায়ে এখন ক্লোজ মনিটরিং হচ্ছে এবং আজকে তার কিছুটা ইম্প্যাক্ট পাওয়া যাচ্ছে, এটা দেখতে পাচ্ছেন তো আপনারা, পাচ্ছেন না? গতকাল যে ট্রেন্ড ছিল আজকে সে ট্রেন্ড নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সুনির্দিষ্টভাবে কী ছিল- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে নির্দেশনা হচ্ছে মাঠ পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো। যারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের দিকে নজরদারি বাড়ানো এবং যারা অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়ার চেষ্টা করছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা। নির্দেশনা পাওয়ার পর মাঠপর্যায়ে টিম কাজ করছে বলে জানান সচিব মো. মাহবুব হোসেন। প্রসঙ্গত, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের অজুহাতে দেশে অস্থির পেঁয়াজের বাজার। একদিনের ব্যবধানে দাম কেজিপ্রতি দিগুণ বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবরে বেড়ে যায় দেশি পেঁয়াজের দামও। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। হঠাৎ করে আমদানি বন্ধ এবং দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
সমুদ্রবন্দরে জেটি নির্মাণের নির্দেশ : বাংলাদেশের বিভিন্ন সমুদ্র বন্দরে জেটি নির্মাণের জন্য নির্দেশ দিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে সামুদ্রিক পর্যটন নীতিমালার খসড়া অনুমোদনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন। বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন আমাদের এরকম টার্মিনাল করা যায় বা জেটি নির্মাণ করা যায়। স্থানগুলো চিহ্নিত করে সেখানে নির্মাণকাজটি যেন দ্রুত শুরু করতে পারেন। এজন্য সমীক্ষা পরিচালনা এবং এ ব্যাপারে কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের যে সমুদ্র তীর আছে সেখানে ডেক বা জেটি নেই। আপনারা যারা বিদেশে গিয়েছেন তারা দেখেছেন যে সব সমুদ্র বন্দরে একটি জেটি থাকে, মানে একটি টার্মিনালের মতো। সেখানে জাহাজগুলো থাকে এবং ওখান থেকে যাত্রী নেয় তারা। সমুদ্রে ট্যুর করে ওখানে আবার যাত্রী নামিয়ে দেয়। এরআগে বঙ্গোপসাগরকে ভিত্তি করে একটি ট্যুরিজম ইকোনমি তৈরি করতে ‘সামুদ্রিক পর্যটন নীতিমালা ২০২৩’র খসড়ার অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, প্রথমবারের মতো এই নীতিমালা অনুমোদন দেওয়া হলো। তিনি বলেন, আমাদের বঙ্গোপসাগরকে ভিত্তি করে যাতে আমরা একটি ট্যুরিজম ইকোনমি তৈরি করতে পারি, সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কীভাবে সহযোগিতা করা হবে, কোন কোন এরিয়ায় কাজ করা হবে তার একটি কার্যক্রম নীতিমালায় বলা আছে। পর্যটকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা, বেসরকারি খাতের যারা বিনিয়োগ করবে তাদের সহযোগিতা করা, আন্তর্জাতিক ট্যুর অপারেটরদের কীভাবে সমন্বয় করতে হবে তা বলা আছে। সমুদ্র পথে যদি কেউ হাজিদের নিতে চায় সেটির ক্ষেত্রে সরকার কীভাবে সহযোগিতা করতে চায় তা বলা আছে।