ঘর পুড়ে যাওয়ায় হলো ব্যবসায়ীর কাল
মাগুরার মহম্মদপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিজানুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ীর দোকানঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে বাবুখালী কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. আলী আহম্মেদ মৃধা মিঞ্জুর বিরুদ্ধে।
উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের বাজার সংলগ্ন সুলতানসী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনায় ওই এলাকার সাধারণ লোকজনের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত মিজানুর রহমান ওই গ্রামের আবুল হোসেন মৃধার ছেলে।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমান জানান, গত ১৪ই এপ্রিল ২০২৩ তারিখে অগ্নিকাণ্ডে দোকানটি পুড়ে যায়। ঘরটি পোড়ায় আমার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরেই আবার ওই জায়গায় ঘর তুলতে গেলে বাবুখালী কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. আলী আহম্মেদ মৃধা মিঞ্জু ও তার লোকজন বাধা দেয় এবং আমাকে বেধড়ক মারধর করে।
তিনি বলেন, এই জমিটি আমরা দীর্ঘ ৮০ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছি। যদিও সম্পত্তিটি এখন সরকারের হয়ে গেছে তবে আমাকে উৎখাত করতে হলে সরকার করতে পারে। অথচ কলেজের সভাপতি জোর করে কাগজপত্র ছাড়াই কলেজের সম্পত্তি বলে দাবী করে এবং আমার দোকান ঘরে হামলা-ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এছাড়া আমাকে ব্যাপক মারধর করে আহত করেছে। আমি আমার দোকানপাট নিয়মিত না করতে পারায় আমার পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহার-অর্ধাহারে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। পুনরায় ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনার করতে পারি সে জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তাহলে পরিবারের মুখে দুমুঠো ভাত খেয়ে বাঁচতে পারতাম। এ বিষয়টি নিয়ে মাগুরার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট একটি লিখিত আবেদন করেছি।
সরেজমিনে গেলে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাবুখালী বাজারে কলেজ সংলগ্ন মার্কেটে হতদরিদ্র মিজানুর রহমান নামে এক ব্যাক্তির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আলী আহম্মেদ মৃধা মিঞ্জুর নেতৃত্বে হামলা হয়। এ সময় তার প্রতিষ্ঠান ভাংচুর লুটপাট ও মিজানুর রহমানকে মারধর করা হয়। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ করেছে কলেজ সভাপতি ।
বাবুখালী কলেজের সভাপতি আলী আহম্মেদ মিঞ্জু ঘর ভাংচুরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কলেজের সম্পত্তিতে মিজানুর রহমান জোরপূর্বক ঘর তুলছেন বিষয়টি জানতে পেরে তাকে নিষেধ করি। তারপরও সে কোন বাঁধা না মানায় তিনি কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে তার ঘর ফেলে দিয়েছি। তবে জায়গাটি কলেজের না সরকারি সম্পত্তি বলে তিনি সেটাও জানান।
কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) দীলিপ কুমার সরকার বলেন, জায়গাটি কলেজেরই ছিল তবে নিজেদের ভুলের কারণে সম্পত্তিটি এখন সরকারী সম্পত্তি হয়ে গেছে। আমরা সেটিকে রিকোভার করার চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে ভাংচুরের বিষয়টি তিনি জানেন বলে জানান।
মহম্মদপুর থানার ওসি মো. বোরহান উল ইসলাম বলেন, ঘর ভাংচুর-লুটপাটের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মহম্মদপুর উপজেলা সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা বাসুদেব কুমার মালো বলেন, জমিটি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের। এখানে কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভোগ দখল করতে পারবে না। কেউ যদি জোরপূর্বক দখল করতে চাই তাহলে সেটা অবৈধ।