রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

বুধবার থেকে সকাল ৭টা-রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল

Reporter Name / ১৫৪ Time View
Update : বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪

আগামী চারদিন অর্থাৎ বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অর্থাৎ ১৩ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে। এ চারদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত চলমান কারফিউ বলবৎ থাকবে।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার পর চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ কথা বলেন।

কারফিউ শিথিলের এ সিদ্ধান্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী জেলায় কার্যকর হবে। অন্য জেলাগুলোতে স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই রাতে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সহিংসতা দমনে সরকার অভিযান চালালে গত ২২ জুলাই থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। ক্রমে বাড়ে কারফিউ শিথিলের সময়। সর্বশেষ রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের যে দাবি ছিল সবকিছু মেনে নেওয়ার পরও সহিংসতা থামেনি, অস্থিরতা থামেনি। আমাদের বাধ্য হয়ে সান্ধ্য আইন (কারফিউ) জারি করতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বৈঠকে আলোচনায় উঠে এসেছে সারাদেশেই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কারণেই সান্ধ্য আইনে আরও কিছু পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সবাইকে আমি অনুরোধ করবো সবাই যাতে সান্ধ্য আইনটি মেনে চলেন‌।’

বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী এখন সিদ্ধান্ত নেবেন কবে থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলবেন, কবে থেকে মাধ্যমিক স্কুলগুলো খুলবেন, কবে থেকে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলবেন। সেগুলো পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন।’

সব জায়গায় অপপ্রচার হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে সঠিক খবর দেশে এবং সারা বিশ্বে যাতে প্রচারিত হয় সে ব্যবস্থা তথ্য প্রতিমন্ত্রী নেবেন।’ এছাড়া কারা আন্দোলন করেছেন, কারা আন্দোলনকারীদের ব্যবহার করেছেন সেটা নিয়ে বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আন্দোলন ঘিরে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ‌ আক্রান্তদের অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ আন্দোলন দমনের কী পরিমাণ গুলি ব্যবহার হয়েছে, কেন ব্যবহার করতে হয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনি তো একজন সাংবাদিক। আপনি তো দেখেছেন ধ্বংসলীলাটা? পুলিশেরও দায়িত্ব তার জীবন রক্ষা করা। প্রথমে পুলিশের যা যা করার তা অতি ধৈর্যের সঙ্গে করেছে। বাধ্য হয়ে আমাদের পুলিশ বাহিনী….।’

‘না পেরে আমাদের সেনাবাহিনী আসতে হয়েছে। যেখানে না পেরেছে বাধ্য হয়ে জীবন রক্ষার জন্য সম্পদ রক্ষার জন্য গুলি করতে বাধ্য হয়েছে। সবকিছুর হিসাব-নিকাশ আমাদের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাখেন। কোনো একটি গুলি কোনো একটি মৃত্যু যদি অনাকাঙ্ক্ষিত হয়, সেজন্য তদন্ত হয়। সেগুলো হবে ইনশাআল্লাহ।’

জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ কোন প্রক্রিয়ায় হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি আইনমন্ত্রী বলেছেন, এটি প্রক্রিয়ায় রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা হয়তো এক ঘণ্টায় হতে পারে, ১০ ঘণ্টায়ও হতে পারে, একদিনে হতে পারে, দুই দিনেও হতে পারে। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।’

এর আগে আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে সাত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলে টানা সোয়া তিন ঘণ্টা, বিকেল ৬টা ৩৫ মিনিটে বৈঠক শেষ হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।

 

এছাড়া বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব/ সিনিয়র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, র‌্যাবের মহাপরিচালকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর