রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন

ত্রিপুরায় আরও ২২ জনের মৃত্যু

Reporter Name / ১১৭ Time View
Update : শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে ভূমিধসে। বন্যায় গৃহহীন হয়েছেন অন্তত ৬৫ হাজার মানুষ। তাঁদের প্রায় ৪৫০ ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টা রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বন্যার কারণে রাজ্যের ৫ শতাংশ মানুষ (১৭ লাখ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয়েছে। রাজ্যের আটটি জেলার মধ্যে অন্তত ছয়টি জেলায় নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাজ্যের সব জেলার জন্যই চূড়ান্ত ‘লাল সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে।

রাজ্যের রাজধানী আগরতলার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ত্রিপুরার বিভিন্ন জেলায় বিচ্ছিন্ন বা প্রবলভাবে (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর জানায়, রাজ্যের দক্ষিণ অংশে গোমতী, সিপাহিজলা এবং ধলাই জেলার কিছু জায়গায় স্বল্প থেকে ভারী (২১ সেন্টিমিটার বা তার বেশি) বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ত্রিপুরার বাকি জেলার একটি বা দুটি জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। কিছু জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায়ও সেখানে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এক বার্তায় ত্রাণ, পুনর্বাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর বলেছে, ‘ত্রিপুরায় গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ ত্রিপুরায় (বগাফা: ৪৯৩.৬ মিলিমিটার), সিপাহিজালা (সোনামুরা: ২৯৩.৪ মিলিমিটার), পশ্চিম ত্রিপুরা (আগরতলা: ২৩৩ মিলিমিটার) এবং গোমাইপুরে: ১৫৫ মিলিমিটার)।

প্রবল বৃষ্টির কারণে গোটা রাজ্য বন্যার কবলে পড়েছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা, উনাকোটি এবং পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বন্যায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্তত সাতজন মারা গেছেন ভূমিধসে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, শান্তিরবাজার মহকুমার দুটি পৃথক জায়গায় তিন পরিবারের ৭ সদস্য ভূমিধসে মারা গেছেন। প্রতি পরিবারকে চার লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুই হাজারের বেশি স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। অনেক জায়গায় রাস্তা পানির স্রোতে ভেসে গেছে।

এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জরুরি সেবা দিতে হেলিকপ্টার অবস্থান করছে। যাতে প্রয়োজনে চূড়ান্ত বিপদের মধ্যে থাকা মানুষজনকে উদ্ধার করা যায়।

উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরায় বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশে পানি প্রবেশের অভিযোগ নিয়ে যে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে, সে প্রসঙ্গে ভারত সরকারের একটি সূত্র জানায়, ‘কোনো গেট খুলে দেওয়া হয়নি।’

সূত্রটি জানায়, যেকোনো বাঁধের নকশা এমন যে তাতে ভেতর থেকে নির্মিত নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে। এটা করা হয়েছে যাতে পানি বাঁধের ওপর দিয়ে বইতে না পারে এবং বাঁধের গঠনগত সমস্যা তৈরি হতে না পারে। এই ব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয় ও নিরাপদভাবে জল বাঁধের দুই দিকের বহির্গমন পথ দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।

সূত্রটি জানায়, জলধার থেকে যে পানি বেরিয়েছিল, সেই পরিমাণকে মোট বৃষ্টির ফলে জমা পানি সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে, তা অত্যন্তই সামান্য। যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা অতীতে হয়নি। এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য ২২ আগস্ট দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশকে জানানো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর