পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ আ.লীগের
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি বলেন, ‘শাহবাজ শরিফের বক্তব্যে প্রমাণ হয়েছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এ দেশে গণহত্যার জন্য লজ্জিত নয়। তারা বারবার এ দেশের স্বাধীনতাকে হেয় করার চেষ্টায় লিপ্ত। সম্প্রতি এ দেশে স্বাধীনতার যাবতীয় স্মৃতিচিহ্ন ধ্বংস করতে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে, তার পেছনে শাহবাজ শরিফদের হাত রয়েছে।’
বিবৃতিতে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর পাকিস্তানিদের দুঃশাসন, শোষণে অতিষ্ঠ ছিল এ দেশের আপামর জনতা। এ সময়ে তাদের মুক্তিদূত হিসেবে আবির্ভূত হন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি দীর্ঘ পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির স্বপ্নে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন, হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু।’
১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নিয়মতান্ত্রিক পথে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে তাদের স্বভাবসুলভ বল প্রয়োগের মাধ্যমে এ দেশের মানুষকে দমনের পথ নেয়। জনগণের গণতান্ত্রিক রায়কে পাশ কাটিয়ে পাকিস্তানিরা আমাদের ওপর একটি অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে এ দেশের আপামর জনতা শুরু করে প্রতিরোধ যুদ্ধ। টানা ৯ মাস প্রশিক্ষিত একটি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অসম একটি যুদ্ধ চলে। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাঙালি হাজার বছরের পরাধীনতার শিকলমুক্ত হয়।’
বঙ্গবন্ধু না থাকলে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না মন্তব্য করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ও বাঙালি জাতির অধিকার ফিরিয়ে দিতে কারাগারে জীবনের যৌবন কাটিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। এই দেশকে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু, আর তারই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলস কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।’
তিনি দাবি করেন, ‘সেই পরাজয়ের দগদগে ক্ষত পাকিস্তানি শাসক ও এ দেশে তাদের দোসররা এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে। আজকে বাংলাদেশে যে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে আর পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন; এসবই একই সূত্রে গাঁথা। শাহবাজ শরিফের বক্তব্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সরাসরি কটাক্ষ, ৩০ লাখ শহীদের আত্মদানের প্রতি অবমাননা। জাতির গৌরবময় লড়াইকে যে ভাষায় শাহবাজ শরিফ কটাক্ষ করেছেন, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শুধু আওয়ামী লীগ বা এ দেশের মানুষের নয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কর্তব্য।’
‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিই জয়ী হবে’ জানিয়ে নাছিম বলেন, ‘ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, পাকিস্তানি কুচক্রী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বাংলার জনগণ বারবার পরাজিত করেছে। ভবিষ্যতেও এই ষড়যন্ত্রকারীরা জয়ী হতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিই জয়ী হবে।‘