November 11, 2025, 12:27 am
শিরোনাম :
শীতকালে স্ট্রবেরি খাবেন যে কারণে শীতের শুরুতেই ফুসফুস সুস্থ রাখবে যে ৭ খাবার ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু হাসপাতালে ভর্তি ১১৯৫ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি তরুণ পেঁয়াজের ঝাজ বেড়ে যাওয়াতে আমদানিতে নমনিয় সরকার যেকোনো মুহূর্তে সিদ্ধান্ত জুলাই সনদ ও গণভোট ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে : ফখরুল ৮০ শতাংশ স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য ভারতে এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেন দুর্ঘটনায় দোষারোপের লড়াই, দোষ আসলে কার ? আলোচনা ব্যর্থ হলেও পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে : তালেবান সরকার পুরান ঢাকার গল্পে আদর-বুবলীর নতুন সিনেমা হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই, ধানের শীষে ভোট চাই : মির্জা ফখরুল 
ব্রেকিং নিউজ :

৮০ শতাংশ স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া স্ট্রোকের অন্তত ৮০ শতাংশ জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব-এ তথ্যই সামনে এনেছেন দেশের শীর্ষ স্ট্রোক বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান ছাড়াসহ খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামে ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। একইসঙ্গে স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্তে সবাইকে জানতে হবে ‘ফাস্ট ’ সম্পর্কে, যেখানে বলা হয়েছে- মুখ বেঁকে যাওয়া, হাত দুর্বল হয়ে পড়া, কথা জড়ানো এবং দ্রæত চিকিৎসা নেওয়া। গতকাল রোববার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের (বিএমইউ) শহীদ ডা. মিলন হলে স্ট্রোক প্রতিরোধ, দ্রæত চিকিৎসা এবং আধুনিক নিউরোইন্টারভেনশন পরিষেবা বিস্তারের লক্ষ্যে আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল স্ট্রোক কনফারেন্সে বক্তারা এ কথা বলেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে অগ্রগতির পরও দেশে স্ট্রোক সচেতনতা অত্যন্ত কম। ফলে লক্ষণ দেখার পর চিকিৎসা পেতে দেরি হয়, আর সেই দেরিই মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়। তারা বলেন, সচেতনতার ঘাটতির কারণেই বহু রোগী সময়মতো চিকিৎসা পান না, আর সেই এক মুহূর্তের দেরিতেই হারিয়ে যায় জীবন। তাই স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্তে সবার জানা থাকা উচিত ‘ফাস্ট’-মুখ ঝুলে পড়া, হাত দুর্বল হয়ে যাওয়া, কথা জড়ানো এবং সময় নষ্ট না করে দ্রæত সহায়তা ডাকা। তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দ্রæত শনাক্ত ও চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ায় প্রাণহানি বেড়ে যায়। চিকিৎসকদের মতে, জীবনধারা পরিবর্তন-উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান ত্যাগ, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম-স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএমইউর ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে স্ট্রোক চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় বাধা হলো দেরি। রোগী যখন হাসপাতালে আসে, ততক্ষণে তার মস্তিষ্কের অমূল্য সময় হারিয়ে যায়। তাই দেশজুড়ে দ্রæত চিকিৎসা দিতে সক্ষম স্ট্রোক কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলা এখন জরুরি প্রয়োজন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, ডিন অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ, রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ এবং বিএইচআরইউটি পরিচালক (মেডিকেল এডুকেশন) অধ্যাপক গিডিঅন মালাওয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বাহাদুর আলী মিয়া। সম্মেলনে চিকিৎসকরা জানান, জনসচেতনতার ঘাটতি এখনো সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। তারা বলেন, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রতিটি মিনিট রোগীর মস্তিষ্কের হিসাব বদলে দেয়। তাই পরিবার, কর্মক্ষেত্র, স্কুল-সব জায়গায় স্ট্রোক সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। এছাড়া বক্তারা বিশ^মানের নিউরোইন্টারভেনশন পরিষেবা দেশে বিস্তারের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, যৌথ গবেষণা, তথ্য বিনিময় এবং বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ বিনির্মাণকে জরুরি বলে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও দক্ষ জনবল তৈরি ছাড়া বাংলাদেশে উন্নত স্ট্রোক কেয়ার কাঠামো দাঁড় করানো সম্ভব নয়। আলোচনায় আরও উঠে আসে-স্ট্রোক প্রতিরোধ শুধু হাসপাতালের দায়িত্ব নয়; এটি একটি সামাজিক দায়িত্বও। খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, নগর পরিবেশ, এমনকি কর্মস্থলের স্বাস্থ্যনীতি পর্যন্ত সবখানেই স্ট্রোক প্রতিরোধকে গুরুত্ব দিতে হবে। সম্মেলনের সারসংক্ষেপে বিশেষজ্ঞরা বলেন, আজকের আলোচনা বাংলাদেশের স্ট্রোক চিকিৎসা ব্যবস্থার রূপান্তরের ভিত্তি তৈরি করবে। সচেতনতার প্রসার, সময়োপযোগী চিকিৎসা, আধুনিক প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সমন্বয়ে আগামী কয়েক বছরে দেশের স্ট্রোক কেয়ার নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক