Dhaka ০১:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৫ সেনা কর্মকর্তা কারাগারে পাঠানোর ও পলাতকদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ৬৩ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত সরকারের আমলে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার বর্তমান ও সাবেক ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারা হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে গুমের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ আসামিকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। জামিনের আবেদন করতে ওকালত নামায় সই করেছেন সেনা অফিসাররা। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, তারা আপাতত কারা হেফাজতে থাকবেন। কারা কর্তৃপ তাদের কোথায় রাখবেন এটা তাদের ব্যাপার। এর আগে সকাল সোয়া ৭টায় তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় সকাল সোয়া ৮টায়। দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে একটিতে ১৭ ও আরেকটিতে ১৩ জন আসামি। দুটিতেই শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। এছাড়া ২৩ সেনা কর্মকর্তার ১৫ জনই হেফাজতে রয়েছেন। কারাগারে পাঠানো ১৫ সেনা কর্মকর্তার মধ্যে ১৪ জন বর্তমানে কর্মরত। একজন এলপিআরে রয়েছেন। তারা হলেন- র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন এবং কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এলপিআর)। র‌্যাবের?্যা গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম এবং বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম। এছাড়া রয়েছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিন কর্মকর্তা মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী। এদিকে, আদালতের নির্দেশের পর ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে কারা হেফাজতে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা সবুজ রঙের গাড়িতে তাদের কারা হেফাজতে নেওয়া হয়। জানা গেছে, এটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। বিগত সরকারের শাসনামলে গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় মোট ৩২ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য ছিল গতকাল বুধবার। সে উপলে ভোর ৪টা থেকেই ট্রাইব্যুনালসহ আদালত প্রাঙ্গণের আশপাশে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। সকাল ৭টায় ট্রাইব্যুনাল গেটে প্রবেশ করে বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা সবুজ রঙের গাড়ি। এই গাড়িতেই ট্রাইব্যুনালে হাজির হন ১৫ সেনা কর্মকর্তা। প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে একে একে সবাইকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের এজলাসে তোলা হয় সকাল সোয়া ৮টায়। অবশ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলের এজলাসে আসামিদের বেশিণ বসে থাকতে হয়নি। প্রায় আধা ঘণ্টার মধ্যেই (সকাল পৌনে ৯টায়) সম্পন্ন হয় আদালতের কার্যক্রম। মূলত মামলার ওকালতনামায় সই করার পরই আসামিদের আবারও সেই বিশেষ প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

১৫ সেনা কর্মকর্তা কারাগারে পাঠানোর ও পলাতকদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ

Update Time : ০৪:৫৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত সরকারের আমলে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার বর্তমান ও সাবেক ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারা হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে গুমের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ আসামিকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। জামিনের আবেদন করতে ওকালত নামায় সই করেছেন সেনা অফিসাররা। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, তারা আপাতত কারা হেফাজতে থাকবেন। কারা কর্তৃপ তাদের কোথায় রাখবেন এটা তাদের ব্যাপার। এর আগে সকাল সোয়া ৭টায় তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় সকাল সোয়া ৮টায়। দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে একটিতে ১৭ ও আরেকটিতে ১৩ জন আসামি। দুটিতেই শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। এছাড়া ২৩ সেনা কর্মকর্তার ১৫ জনই হেফাজতে রয়েছেন। কারাগারে পাঠানো ১৫ সেনা কর্মকর্তার মধ্যে ১৪ জন বর্তমানে কর্মরত। একজন এলপিআরে রয়েছেন। তারা হলেন- র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন এবং কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এলপিআর)। র‌্যাবের?্যা গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম এবং বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম। এছাড়া রয়েছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিন কর্মকর্তা মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী। এদিকে, আদালতের নির্দেশের পর ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে কারা হেফাজতে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা সবুজ রঙের গাড়িতে তাদের কারা হেফাজতে নেওয়া হয়। জানা গেছে, এটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। বিগত সরকারের শাসনামলে গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় মোট ৩২ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য ছিল গতকাল বুধবার। সে উপলে ভোর ৪টা থেকেই ট্রাইব্যুনালসহ আদালত প্রাঙ্গণের আশপাশে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। সকাল ৭টায় ট্রাইব্যুনাল গেটে প্রবেশ করে বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা সবুজ রঙের গাড়ি। এই গাড়িতেই ট্রাইব্যুনালে হাজির হন ১৫ সেনা কর্মকর্তা। প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে একে একে সবাইকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের এজলাসে তোলা হয় সকাল সোয়া ৮টায়। অবশ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলের এজলাসে আসামিদের বেশিণ বসে থাকতে হয়নি। প্রায় আধা ঘণ্টার মধ্যেই (সকাল পৌনে ৯টায়) সম্পন্ন হয় আদালতের কার্যক্রম। মূলত মামলার ওকালতনামায় সই করার পরই আসামিদের আবারও সেই বিশেষ প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।