November 9, 2025, 4:00 pm
শিরোনাম :
ব্রেকিং নিউজ :

শাহবাগে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রোববার (৯ নভেম্বর) থেকে সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন সহকারী শিকরা।

শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেন প্রাথমিক সহকারী শিক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহŸায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ।

তিনি বলেন, ‘দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল (রোববার) থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থানের পাশাপাশি সারাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে।’

প্রাথমিক শিা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিকের সংখ্যা তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি। আর শিক্ষার্থী প্রায় এক কোটি।

আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীা হওয়ার কথা রয়েছে। বার্ষিক পরীা সামনে রেখে শিকদের আন্দোলন ও কর্মবিরতিতে শিাক্ষর্থীরা পিছিয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা।

দশম গ্রেডে বেতন-ভাতাসহ তিন দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘লাগাতর অবস্থান’ কর্মসূচির প্রথমদিনেই পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

শনিবার (৮ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থানের পর বিকেলে ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। এ কর্মসূচি করতে পদযাত্রা নিয়ে শাহবাগ অভিমুখে যান শি করা। তাতে বাধা দেয় পুলিশ।

পুলিশের ব্যারিকেডে শাহবাগ মোড়ে যাওয়ার আগেই রাস্তায় আটকা পড়েন শিকরা। সেখানে অবস্থান নিয়ে ¯েøাগান দেন তারা। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ শিক্ষকদের শহীদ মিনারে ফিরে যেতে বললেও তারা শাহবাগ মোড়ে কলম সমর্পণ কর্মসূচি না করে ফিরবেন না বলে জানান।

বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পুলিশ প্রথমে শিকদের অবস্থানকে ল্য করে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে ছোটাছুটি শুরু করেন শিকরা। এরপর জলকামান নিপে করে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের বাধার মুখে পÐ হয়ে যায় শিকদের কলম সমর্পণ কর্মসূচি।

শিক্ষক নেত্রী খায়রুন নাহার লিপিসহ আহত শতাধিক : পুলিশের ছোড়া সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও জলকামানে শতাধিক আন্দোলনরত শিক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ অতর্কিত আক্রমণ করেছে। সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ছুড়েছে পুলিশ। এতে আমাদের সবার প্রিয় শিক খায়রুন নাহার লিপিসহ শতাধিক শিক আহত হয়েছেন। তারা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পুলিশের এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা।

তবে আহত সবার নাম-পরিচয় তাৎণিক জানাতে পারেননি শামছুদ্দীন মাসুদ। তিনি বলেন, চাঁদপুরের শাহরাস্তির সহকারী শিক মো. ফারুক হোসাইন আহত হয়েছেন। তাছাড়া আরও অনেকে আহত হয়েছেন। সবার তালিকা করে প্রকাশ করা হবে।

কর্মসূচি চলমান থাকবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘শিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও তিন দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাদের কর্মসূচি চলবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।’

সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো- দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা সাড়ে ৬৫ হাজারের বেশি। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক সংখ্যা তিন লাখ ৮৪ হাজার। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রণালয় প্রধান শিকদের বেতন ১১তম থেকে দশম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে থাকা শিকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়। তবে এ পদেেপ সন্তুষ্ট নন সহকারী শিকরা।

শিক্ষকরা কথা দিয়ে কথা রাখেনি: শিক্ষকরা যে কথা বলে কর্মসূচি শুরু করেছিলেন, তা রাখেননি বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।

রাস্তা থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দেওয়ার পর ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিকরা আমাদের জানিয়েছিলেন, তারা অবস্থান কর্মসূচি করবেন। এরপর দাবি-দাওয়ার স্মারকলিপি দিয়ে ফিরে যাবেন। কিন্তু আমরা দেখলাম, তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সহিংস মনোভাব দেখাচ্ছিলেন। পুলিশ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সরিয়ে দিয়েছে। জনগণের ভোগান্তি দূর করতে রাস্তা ফাঁকা করা হয়েছে।

শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক: এদিকে, খুলনায় এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, দশম গ্রেডের দাবিতে সহকারী শিকদের এ আন্দোলন অযৌক্তিক।

তিনি বলেন, বেশিরভাগ সহকারী শিক্ষক মনে করেন দশম গ্রেডের এ দাবি যৌক্তিক নয়। প্রধান শিকদের দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষকদের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে তাদের দশম গ্রেডে আনা; এটি সম্ভব নয়। একবারে ১৩ থেকে ১০ম গ্রেডে আনার কোনো যুক্তিই নেই।

‘তারা যেন ১১তম গ্রেড পেতে পারেন, সেজন্য আমরা কাজ করছি। তাদের এ মুহূর্তে আন্দোলনে যাওয়াটাও যৌক্তিক নয়।’ যোগ করেন বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুক