আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে দুটি বৃহৎ তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসি বলছে, নিষেধাজ্ঞা শুধু রাশিয়ার অর্থনীতিতেই নয়, বরং বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। রাশিয়ার ফেডারেল বাজেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসে তেল ও গ্যাস খাত থেকে। ফলে এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার রাজস্ব আয়ে বড় আঘাত করবে। এর প্রভাব বিশ্বজুড়েও ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ দেশটি সবচেয়ে বেশি তেল-গ্যাস রপ্তানি করে এশিয়ার দুই বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন ও ভারতে। তালিকায় এর পরেই আছে তুরস্ক।
গত বছর চীন রাশিয়ার কাছে থেকে ১০০ মিলিয়ন টনের বেশি অপরিশোধিত তেল কেনে। যা দেশটির মোট জ্বালানি আমদানির ২০ শতাংশ। ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ভারতে রাশিয়ার তেল রপ্তানি ছিল সামান্য। কিন্তু ২০২২ সাল থেকে তা বেড়ে ১৪০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার যে দুটি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলো হলো লুকঅয়েল ও রসনেফট। বিবিসি জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে তেলের দামে প্রভাব ফেলেছে। আন্তর্জাতিক মানদÐ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করলে ব্রেন্টের দাম বেড়েছিল ১.৬ শতাংশ। সে সময় লন্ডনে রাশিয়ান দূতাবাস সতর্ক করেছিল, বড় রুশ জ্বালানি কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে তা বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত করবে। এতে খরচও বাড়াবে। তবে তখন বাস্তবে তেমন কোনো বড় প্রভাব দেখা যায়নি। তবে নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের দাম, প্রকৃত সরবরাহ ও চাহিদা পরিবর্তনের চেয়ে যে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে সেটিই বড় শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিডনি ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ফেলো স্টুয়ার্ট রোলো বলছেন, মাঝারি বা দীর্ঘমেয়াদে এই নিষেধাজ্ঞাগুলোর ফলে বৈশ্বিক তেলের দামে বড় প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। প্রভাব তখনই পড়বে যখন, রসনেফট ও লুকঅয়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে।
জ্বালানি খাতের শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারীদের হয়ে গবেষণা করে র্যাপিডান এনার্জি গ্রæপ।
এর প্রেসিডেন্ট বব ম্যাকন্যালি সিএনবিসি নিউজকে বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞার অর্থ হলো ক্রেতাদের এখন তেল পরিবহন ও মূল্য পরিশোধের জন্য নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এটি অতিরিক্ত খরচ ও জটিলতা তৈরি করবে। যুক্তরাষ্ট্র ঠিক এটিই চায়। তাদের লক্ষ্য রাশিয়ার তেল রপ্তানি ব্যাহত করে মুনাফা কমিয়ে দেওয়া।
Reporter Name 














