স্পোর্টস ডেস্ক : ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের গত আসরে অংশ নিয়েছিল চিটাগং কিংস। কিন্তু বিপিএল যত মাঠে গড়ায়, চিটাগং কিংসের অনিয়ম, পারিশ্রমিক ইস্যু তত সামনে আসে। অথচ তাদের ক্রিকেটাররা মাঠে সেরা ক্রিকেট উপহার দিয়েই দলকে ফাইনালে তুলেছিল। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদেরকে। হোটেলের বিল বকেয়া, ব্র?্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের পারিশ্রমিক বকেয়া, নারী সঞ্চালকের পারিশ্রমিকে গড়িমসি এবং খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ও দৈনিক ভাতা পর্যন্ত বকেয়া রেখেছিল দলটি। এ নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। এবারের বিপিএলেও তারা দল চেয়ে বিসিবির কাছে আবেদন করেছিল। কিন্তু বিসিবি তাদেরকে বাদ দিয়েই বিপিএল আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে আদালত পর্যন্ত গেলেও তাতে লাভ হয়নি। চিটাগং কিংসের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান এস কিউ স্পোর্টসকে বিপিএলে রাখতে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ববর্তী একটি আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। শুনানি শেষে চেম্বার জজ আদালত এই স্থগিতাদেশ দেন। বিসিবির আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহিন রহমান জানিয়েছেন, এই আদেশের ফলে চিটাগং কিংসকে বিপিএলে অন্তর্ভুক্ত করার আর কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা থাকল না। তিনি স্পষ্ট জানান, বিপিএলে দল পেতে হলে এস কিউ স্পোর্টসকে অবশ্যই বিসিবির নির্ধারিত নিয়ম মেনেই আসতে হবে। বিসিবি সম্প্রতি পাঁচ বছরের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি চেয়ে আবেদন আহŸান করে। ১১টি আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯টিকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানালেও, চিটাগং কিংসের জন্য আবেদন করা এস কিউ স্পোর্টসকে সেই সভায় ডাকা হয়নি। এর প্রতিবাদে এস কিউ স্পোর্টস বিসিবির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তোলে। তারা দাবি করে, চলমান আইনি প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে আদালতের আদেশ অমান্য করেছে বিসিবি। বিসিবির পক্ষ থেকে তখন জানানো হয়েছিল, নিয়ম অনুযায়ী ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি বাবদ দুই কোটি টাকার পে-অর্ডার জমা না দেওয়ায় এস কিউ স্পোর্টসকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে চিটাগং কিংস এই ব্যাখ্যাকে ‘বাস্তবতার পরিপন্থী’ বলে দাবি করে। তাদের ভাষ্য ছিল, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য ইফতেখার রহমানের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে যে, পূর্ববর্তী একটি বিরোধ নিষ্পত্তির পরই তারা নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি জমা দেবে। সব জল্পনা-কল্পনা শেষে, অনেক ব্যাখ্যা এবং হিসেবের অঙ্ক না মিলিয়েই সিদ্ধান্ত হয়েছে চিটাগং কিংসকে বিসিবি ফ্রাঞ্চাইজি দেবে না। তাদের না রাখার ব্যাখ্যায় ইফতেখার রহমান মিঠু বলেছেন, ‘‘প্রাথমিক যাচাই-বাছাই এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শেষে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের আইন বিভাগ, লিগ্যাল কনসালেটেন্সি ফার্ম এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফার্ম ১১টি ইওআই অংশগ্রহণকারীর নথি পর্যালোচনা করেছে। বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের তিনটি প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়ায় শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এসকিউ স্পোর্টস এন্টারপ্রাইজ, বাংলা মার্ক লিমিটেড, মাইন্ড ট্রি ও রূপসী কনক্রিট লিমিটেড কনসোর্টিয়াম।’’ চিটাগং কিংসকে নিয়ে আলাদা করে ইফতেখার রহমান বলেছেন, ‘‘আমাদের কাছে যে অভিযোগগুলো এসেছে- শন টেইট তাদের কাছে প্রায় ৩৭ হাজার ডলার পায়, রোজ ভিউ হোটেল সিলেট তারা প্রায় ১৭ লাখ টাকা কেইম করেছে, শেরাটন হোটেল ২৯ লাখ টাকা পায়।
আপনারাও জানেন অনেক ক্রিকেটার কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসে বলছে তারা টাকা পায়নি। এর আগে শহীদ আফ্রিদিও কেইম করেছিল, ইয়াশা সাগরও অভিযোগ করেছিল। সাথে আমাদের আগের আসরেও বিবাদ আছে, আর্বিটেশনে চলছে। এটা চিটাগং কিংসের পরিস্থিতি।’’ তাদের থেকে বকেয়া অর্থ উদ্ধারে আরো কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেন বিসিবির আইনজীবী ব?্যারিস্টার মাহিন রহমান, ‘‘হ্যাঁ, তাদের (চিটাগং কিংস) বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। উনি যে অর্ডার নিয়েছেন কোর্ট থেকে, আমরা কিন্তু ওইটা গ্রহণ করিনি। আমরা কিন্তু আপিল করেছিলাম এবং আপিল করে আমরা সেটার উপর স্থগিতাদেশ পেয়েছি। তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করার জন্য যত আইনি প্রক্রিয়া কোনটাই আমরা বাদ রাখছি না। আমরা কঠিন আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’